tag (gtag.js) --> ঠাকুরগাঁও বার্তা: ইতিহাস ঐতিহ্য

মেনুবার

ইতিহাস ঐতিহ্য

 ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস:



ঠাকুরগাঁও জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও সমৃদ্ধ জেলা। এর রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। নিচে ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

 নামকরণের ইতিহাস: "ঠাকুরগাঁও" নামটি এসেছে "ঠাকুর" এবং "গাঁও" শব্দ দুটি থেকে। "ঠাকুর" বলতে এখানে ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতকে বোঝানো হয়েছে এবং "গাঁও" মানে গ্রাম। প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই অঞ্চলে একসময় অনেক ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতের বসবাস ছিল, যা থেকে এই স্থানটি "ঠাকুরগাঁও" নামে পরিচিতি লাভ করে।

প্রতিষ্ঠা ও বিবর্তন

প্রাচীন যুগ: ঠাকুরগাঁও অঞ্চল প্রাচীনকালে পুণ্ড্রবর্ধন জনপদের অংশ ছিল। মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন ইত্যাদি বিভিন্ন রাজবংশের শাসনাধীনে ছিল এই অঞ্চল।

সুলতানি ও মোঘল যুগ: সুলতানি ও মোঘল শাসনামলেও এর গুরুত্ব ছিল। এই সময়ে অনেক মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনা তৈরি হয়, যার কিছু ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখা যায়।

ব্রিটিশ শাসন:  ব্রিটিশ শাসনামলে ঠাকুরগাঁও দিনাজপুর জেলার একটি মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬০ সালে। সে সময় এটি প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। * **দেশ বিভাজন ও পাকিস্তান আমল:** ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঠাকুরগাঁও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়।

 স্বাধীনতা পরবর্তী সময়:  বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে ঠাকুরগাঁও মহকুমা থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ জেলায় উন্নীত হয়।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলী ও বিদ্রোহ: ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই অঞ্চলের কৃষকরা তেভাগা আন্দোলনসহ বিভিন্ন কৃষক বিদ্রোহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও ঠাকুরগাঁওয়ের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ঠাকুরগাঁও ছিল ৭নং সেক্টরের অধীনে এবং বহু মুক্তিযোদ্ধা এখানে যুদ্ধ করেছেন। 

ঠাকুরগাঁও জেলার ঐতিহ্য:

জেলার ঐতিহ্য: নদী মেখলা প্রকৃতি দুলালী এই বাংলাদেশে সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে লোক সংস্কৃতি অবিচ্ছেদ্য। আজ অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের যুগে সভ্যতার চরম বিকাশ হওয়ার সাথে সাথে বাংলার পল্লী জীবনের জীবনযাত্রা পদ্ধতিতে, আচার-অনুষ্ঠানেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। কিন্তু এতদসত্বেও তা একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। এই দেশ কৃষির- এই দেশ কৃষকের। তারই প্রতিফলন রয়েছে ঠাকুরগাঁও-এর পরতে পরতে। এখানে দিনান্তে শ্রান্ত ক্লান্ত কৃষকের ঘরের দাওয়ায় মাদুর পেতে বসে কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে সোনাভানের পুঁথি কিংবা দেওয়ান ভাবনার পালাপাঠের আসর বসে। 

লোকসাহিত্য, লোকনৃত্য, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, বাউল মুর্শিদি, মারফতী, কবিগান, যাত্রা, জারী, কীর্তন, পালাগান ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁওয়ের লোকসংস্কৃতির অবদান রয়েছে। সমগ্র দেশের লোকসংস্কৃতির মধ্যে একটা সামঞ্জস্য থাকলেও ভৌগোলিক পরিবেশের কারণে অঞ্চল ভেদে এখানে এর ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন