tag (gtag.js) --> ঠাকুরগাঁও বার্তা: আবহাওয়া ও জলবায়ু

মেনুবার

আবহাওয়া ও জলবায়ু

 অবস্থান ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য:

 ঠাকুরগাঁও জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি হিমালয়ের পাদদেশের কাছাকাছি হওয়ায় এখানকার আবহাওয়া ও জলবায়ুতে এর প্রভাব দেখা যায়। এই জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলা, পূর্বে পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত। 

 সাধারণ জলবায়ু: ঠাকুরগাঁওয়ের জলবায়ু উপক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির। এখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র, বর্ষাকাল প্রচুর বৃষ্টিপাত সহ আর্দ্র এবং শীতকাল শুষ্ক ও শীতল থাকে।

তাপমাত্রা:  গ্রীষ্মকাল (মার্চ-মে): এই সময়ে তাপমাত্রা সাধারণত ২৫° সেলসিয়াস থেকে ৩৫° সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে। এপ্রিল ও মে মাস উষ্ণতম মাস। মাঝেমধ্যে তাপমাত্রা ৩৮-৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। 

বর্ষাকাল (জুন-সেপ্টেম্বর): এই সময়ে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে, সাধারণত ২৬° সেলসিয়াস থেকে ৩১° সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। 

শীতকাল:  (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি): শীতকালে তাপমাত্রা বেশ কমে যায়। দিনের বেলায় তাপমাত্রা ১৫° সেলসিয়াস থেকে ২৫° সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে, তবে রাতের বেলায় ১০° সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে। জানুয়ারি মাস শীতলতম মাস, এ সময় তাপমাত্রা ৫° সেলসিয়াস থেকে ৭° সেলসিয়াসের মধ্যেও থাকতে পারে। মাঝেমধ্যে শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে আসে এবং তীব্র শীত অনুভূত হয়।  

বৃষ্টিপাত: ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, বিশেষ করে বর্ষাকালে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হয়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ২০০০-২৫০০ মিমি। বর্ষাকালে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হয় এবং কখনও কখনও ভারী বর্ষণের ফলে বন্যাও দেখা দেয়।

আর্দ্রতা:  গ্রীষ্মকাল এবং বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে, প্রায় ৭০-৯০%। শীতকালে আর্দ্রতা কমে আসে, সাধারণত ৫০-৭০% থাকে। বায়ুপ্রবাহ সাধারণত, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উষ্ণ বায়ু প্রবাহিত হয়। বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকে যা প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। শীতকালে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়। 

 ঋতুভিত্তিক বৈশিষ্ট্য:

গ্রীষ্মকাল:  উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া দিয়ে শুরু হলেও এপ্রিলের শেষ দিক থেকে বা মে মাসের শুরু থেকে কালবৈশাখী ঝড় দেখা যায়। 

 বর্ষাকাল:  জুন থেকে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং আবহাওয়া আর্দ্র থাকে। 

শরৎকাল(অক্টোবর-নভেম্বর): বর্ষার পর আবহাওয়া শান্ত ও মনোরম থাকে। আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আসে।

 শীতকাল:  নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। এই সময় শুষ্ক ও শীতল আবহাওয়া থাকে। ঘন কুয়াশা পড়া ঠাকুরগাঁওয়ের শীতকালের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা কখনও কখনও দুপুরের পরেও দেখা যায় এবং জনজীবনকে প্রভাবিত করে। 

বসন্তকাল: (ফেব্রুয়ারি-মার্চ): শীতের তীব্রতা কমে আসে এবং আবহাওয়া উষ্ণ হতে শুরু করে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব:

 সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঠাকুরগাঁও জেলাতেও কিছু প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমন:  বৃষ্টিপাতের ধরনে অনিয়ম, অর্থাৎ অসময়ে বৃষ্টিপাত বা কম সময়ে বেশি বৃষ্টিপাত।  শীতকালের তীব্রতা বৃদ্ধি বা হ্রাস এবং দীর্ঘস্থায়ী কুয়াশা। তাপমাত্রার অস্বাভাবিক ওঠানামা।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন